শিশুদের উপরে ভার্চুয়াল জগতের প্রভাব | শিক্ষকতার ইন্টারভিউ প্রশ্ন 2025 | প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রশ্ন | প্রাইমারি ভাইবা পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর | প্রাইমারি ইন্টারভিউ প্রশ্ন | শিক্ষকতার ইন্টারভিউ প্রশ্ন | প্রাইমারি ইন্টারভিউ | প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা সম্পর্কিত ইন্টারভিউ প্রশ্ন | ভার্চুয়াল জগৎ ও শিশু
শিশুদের উপরে ভার্চুয়াল জগতের প্রভাব এর বেশ কয়েকটি প্রশ্ন এবং তাদের উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দ্বারা আয়োজিত টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া 2025 আয়োজিত হতে চলেছে খুব শীঘ্রই। এই পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করার মতো বেশ কয়েকটি প্রশ্ন নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন। অনুগ্রহ করে সম্পূর্ণ প্রশ্ন এবং উত্তরগুলি যাচাই করুন এবং কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত ব্যক্ত করুন।
শিক্ষকতার ইন্টারভিউ প্রশ্ন | |
পরীক্ষার নাম | West Bengal Teachers Eligibility Test (WB Primary TET) |
পরীক্ষা পরিচালনাকারী সংস্থা | West Bengal Board of Primary Education (WBBPE) |
পরীক্ষার স্তর | রাজ্য-স্তর |
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | www.wbbprimaryeducation.org |
প্রশ্ন– আচ্ছা আপনি কি মনে করেন যে ফেসবুক বা এই ধরনের সোশ্যাল সাইটগুলি ব্যবহারের কোন বাজে দিক আছে?
উওর-হ্যাঁ বাজে দিক কিংবা নেগেটিভিটি তো অবশ্যই আছে ফেসবুক বা এই ধরনের সোশ্যাল সাইটগুলির। যেমন অতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহার আমাদের প্রচুর সময়ের অপচয় ঘটায়, আমাদের মনোযোগ নষ্ট করে দেয় কোন প্রোডাক্টিভ কাজের প্রতি। বেশি সোশ্যাল সাইটের মধ্যে সময় দেওয়ার জন্য আমরা ভার্চুয়াল জগতের প্রতি আকর্ষিত হয়ে পড়ছি, ফলে আমাদের বাস্তব বন্ধু বান্ধবের সংখ্যা কমছে এবং আমাদের মধ্যে একাকীত্ব চলে আসছে।
প্রশ্ন-বাচ্চাদের কি ফেসবুক বা এই ধরণের সোশ্যাল সাইট ব্যবহার করা উচিত?
উত্তর-ছোট বাচ্চাদের ফেসবুকে বা সোশ্যাল সইটে থাকার দরকার নেই। বাস্তব বিশ্বে তাদের যতটা সম্ভব জীবনযাপন করা উচিত। ফেসবুকে বা বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে বাচ্চাদের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো এই রূপ হতে পারে বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট, স্ট্যাটাস শেয়ার, ফটো বা বিভিন্ন আপডেট ভাগ করে নেওয়া শিশুদের প্রচণ্ড ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাডিকটেড করে তোলে, এতে করে শিশুদের দৈনন্দিন জীবন, পড়াশুনা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিছু অনলাইন গেম আছে যার লিঙ্ক বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে পাওয়া যায় সেইগুলি থেকে একটা শিশুর পক্ষে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া সাইবার হ্যাকিং, নিজের ব্যক্তিগত তথ্য নিজের অজান্তে অন্যকে জানিয়ে ফেলা ইত্যাদি ভয়গুলি তো আছেই।
প্রশ্ন-অনলাইন গেম শিশুদের কীভাবে ক্ষতি করছে?
উত্তর-PUBG, Free fire, Fortnite, Minecraft অথবা Animal Crossing মতো অনলাইন গেমগুলি শিশুদের বেশ কিছু বিষয়ে ক্ষতি করে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে। বাচ্চাদের এই গেমগুলি শারীরিক ও মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে থাকে। কখনো কখনো নিউজের হেডলাইনে পাওয়া যায় গেম খেলে শিশুর আত্মহত্যার মত ঘটনা। অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে শিশুরা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য অন্যপক্ষকে দিয়ে থাকে, অনেক সময় আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়, অনেক সময় অ্যাডাল্ট কন্টেন্টের সম্মুখীন হয়। এতে করে শিশুর শারীরিক ও মানসিক ঝোঁক বেড়ে যায় এবং শিশুর ভবিষ্যৎ পঙ্গু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন-বাচ্চাদের অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি কীভাবে ক্ষতি করছে?
উত্তর-শিশুদের অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি নানাভাবে ক্ষতি করে শিশুকে তাঁর কিছু প্রভাব শিশুর মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি শিশুকে অসামাজিক করে তোলে। শিশুর বাইরের জগতের প্রতি, খেলাধুলার প্রতি, পড়াশুনার প্রতি আকর্ষণ কমে যায়, এতে করে শিশুর শারীরিক গঠন ও মানসিক গঠন দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। মোবাইলের লাইট, রেডিয়েশন ইত্যাদি দ্বারা শিশুর চোখ, ব্রেইন ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রশ্ন-বাচ্চাদের অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় কিছু বলুন যে গুলি অভিভাবকদের ফলো করা উচিত?
উত্তর-বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর জন্য বেশ কিছু কার্যকারী উপায় আছে সেগুলি প্রত্যেক অভিভাবক বা অভিভাকিদের ফলো করা উচিত-
- বাচ্চাদের হাতে পুরোপুরি মোবাইল ছেড়ে দেওয়া যাবে না, একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গার্জেনদের মনিটারিং-এ বাচ্চাদের মোবাইল দেওয়া যেতে পারে।
- মোবাইল নেট, ওয়াই-ফাই এর ব্যবহার যতটা সম্ভব কম করতে হবে এবং বাচ্চাদেরও কম ব্যবহার করতে দিতে হবে।
- রাতে জেগে বাচ্চারা যাতে মোবাইল না দেখে সেই দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
- বাচ্চাদের টেকনো ফ্রেন্ডলি করার জন্য ডেক্সটপ ব্যবহার করতে উৎসাহিত করা যেতে পারে এবং ডেক্সটপ এর অবস্থান হবে বাড়ির কমন কোন স্থানে।
- অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি কমানোর জন্য বাচ্চাদের বাইরে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বা আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে খেলার জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
- বাচ্চাদের মাঝে মাঝে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে এবং তাদেরকে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত করতে হবে।
- বাচ্চাদের সঙ্গে অভিভাবকদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে। তাকে জীবনের ইতিবাচক বিষয়গুলি বোঝাতে হবে।
উপরের এই পয়েন্টগুলি ফলো করার পরেও যদি বাচ্চার মোবাইল আসক্তি না কমে তাহলে সর্বশেষ পর্যায় হলো মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া।